সেশনের শুরুতে তোমাকে সবার সাথে নিচের গানটি গাইতে হবে। গানটি জানা না থাকলে সমস্যা নেই। তুমি অন্য সবার সাথে সুর মিলিয়ে গাইতে চেষ্টা করো।
বরষ-আশিস-বারি
(আজি) অবিরত ধারে যীশু সবার উপরি
কী উপহার দিব আজি গুণধাম,
(এই) এনেছি তখন চিত, লহ, পাপহারি!
জ্বাল প্রেম- অগ্নি সকল হৃদয়ে,
(সবে) পর-সেবা তরে যেন প্রাণ দিতে পারি।
সেবা কর দুঃখীজনে, সেবা কর আর্তজনে
সে তো তোর খ্রীষ্টসেবা
চোখের জলে হাহাকারে যে বসে রয় পথের ধারে
তারে বুকে তুলে নে ভাই, সেই তো তোর খ্রীষ্টসেবা।
গান করা যে শুধু ভালো, প্রার্থনা যে আরও ভালো
সবার চেয়ে ভালো যে ভাই ঘুচাস যদি মনের কালো
Field trip-এর পূর্বে তোমার করণীয়
তুমি একটি field trip-এ যাবে। তুমি হয়তো একটা সাহায্য সংস্থার/ধর্মপল্লির সাহায্য কার্যক্রম দেখতে যাবে। শিক্ষক frield trip সম্পর্কে যা বলেছেন সেভাবে প্রস্তুতি নাও। পোশাক, গরম কাপড়, খাবার, জুতা, পানি, নোটবুক, কলম, পেন্সিল, ব্যাগসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নাও। যাত্রা শুরু করার পূর্বে শিক্ষকের নির্দেশনাগুলো ভালোভাবে মাথায় রেখো। কীভাবে আচরণ করতে হবে, পরিদর্শনের সময় কীভাবে কাটবে, কী করতে হবে, কখন ফিরে আসতে হবে—এই বিষয়গুলো ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করো। কিছু কিছু কাজ ও আচরণ করার ক্ষেত্রে নিষেধ থাকতে পারে। শিক্ষকের দেয়া অনুমতিপত্রে পিতা-মাতা/ অভিভাবক স্বাক্ষর করার পর যথাসময়ে তা শিক্ষকের হাতে ফেরত দিবে।
পর্যবেক্ষণ
সারিবদ্ধভাবে শৃংঙ্খলার সাথে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হও। যানবাহন থেকে শৃংঙ্খলার সাথে নেমে পড়ো। ভুল করে যানবাহনে জিনিসপত্র ফেলে এসো না। তোমাদের যদি গাইত থাকে তার নির্দেশনা ভালোভাবে শোনো। কিছু জানতে চাইলে অথবা বুঝতে না পারলে গাইডকে প্রশ্ন করতে পারো। তাতে তোমার জ্ঞানের গভীরতা বাড়বে। গুরুত্বপূর্ণ ও নতুন কিছু বিষয় নোটবুকে লিখে রাখো। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে ভুলো না কিন্তু।
তুমি কী দেখতে পাচ্ছ? তোমার শিক্ষক তোমাকে যে স্থানে নিয়ে গিয়েছেন সে স্থানের সাপেক্ষে তুমি ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য দেখতে পাবে। হয়তো দেখতে পাবে অনেক মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, অথবা দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের হাতের কাজের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, অথবা দরিদ্র মায়েরা অসুস্থ শিশুদের নিয়ে এসেছে, অথবা চিকিৎসক ও নার্স তাদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। অথবা দেখতে পাবে। কোনো পথশিশুদের স্কুল।
লক্ষ করো, এই সংস্থার সেবাকর্মীরা কত সুন্দর করে কথা বলছে, তাদের সেবাকর্মে কত আন্তরিকতা পরোপকার ও দয়ার কাজ করতে পেরে তারা খুব আনন্দিত। যীশু এরকম পরোপকারী মানুষদের অনেক ভালোবাসেন। মনোযোগ সহকারে সব পর্যবেক্ষণ করো।
পরিদর্শন শেষ করার কিছুক্ষণ পূর্বে শিক্ষক ফিরে যাবার ঘোষণা দিবেন। সঠিক সময়ে যানবাহনে উঠে বসো। তুমি সুন্দর ও নিরাপদে field trip করতে পেরেছ এজন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রার্থনা করো। গাড়িতে বসে সবাই মিলে ধন্যবাদমূলক প্রার্থনা করতে পারো। তোমার শিক্ষককেও ধন্যবাদ জানাও। পৌঁছে গেলে সারিবদ্ধভাবে নেমে পড়ো। পিতা-মাতা/অভিভাবক নিতে এলে তাদের সাথে বাসায় চলে যাও। আর যদি একা যাও, পথে দেরি কোরো না কারণ তোমার পরিবারের লোকজন দুশ্চিন্তা করতে পারে।
বাড়ির কাজ
শিক্ষক তোমাকে একটি বাড়ির কাজ দিতে পারেন। বাড়িতে গিয়ে তোমার বাবা-মা / অভিভাবককে জিক্সে করো পরোপকার ও দানশীলতা বিষয়ে তাদের ধারণা কী। তাদের সাথে আলোচনা করে যা জানতে পারবে তা নোটবুকে লিখে রাখো। বাবা-মা/অভিভাবক তোমার কথাটি বুঝতে না পারলে পরের লেখাটি তাদের দেখাও—
প্রিয় বাবা-মা/অভিভাবক,
আপনার সন্তান পরোপকার ও দানশীলতা বিষয়ে আপনার সাথে আলোচনা করতে চায়। তাকে সময় দিন এবং আপনার ভাবনাগুলো তাকে জানিয়ে সাহায্য করুন। ধন্যবাদ।
ছবি আঁকি
বাসায় ফিরে তুমি পরিদর্শনে যা যা দেখেছো তা স্মৃতি থেকে ভেবে ভেবে এঁকে ফেলো!
|
প্রিয় শিক্ষার্থী, সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করো। সমবেতকণ্ঠে এই গানটি গাও
হে পিতা রেখে দিই আজ তোমার চরণে সেবার দান
মনের চিন্তা, মুখের কথা, হাতের কাজ
মোর সব কিছু রেখে দিই আজ
তোমার চরণে পূজার দান।
নিবেদন আমার মিলিয়ে দিলাম
তোমার চরণে যীশুরই সাথে
তারই চিন্তা তাঁরই কথা, তাঁরই কাজ
তাঁরই নিবেদনে মিলিয়ে নিলাম
তোমার চরণে নিবেদন আমার।
তুমি নিশ্চয়ই field trip থেকে ও মা-বাবা / অভিভাবকের সাথে আলোচনা করে পরোপকার, প্রার্থনা ও দানশীলতা সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছো। এবার তোমার শিক্ষক তোমাদের একাধিক দলে ভাগ করবেন। দলপ্রধান তোমরা নিজেরাই নির্বাচন করবে। শিক্ষক হয়তো আগের দিন তোমাকে এবং তোমার কোনো সহপাঠীকে একটা postbox/ডাকবাক্স তৈরি করতে বলবেন। হয়তো ভাবছো ডাকবাক্স দিয়ে কী করব। শিক্ষক যা নির্দেশ দিবেন তা-ই করবে।
তোমার অভিজ্ঞতা দলের অন্যদের সাথে আলোচনা করো। দলে আলোচনার সময় অন্যদের কথা ও অভিমত মনোযোগ দিয়ে শোনো। এবার দলপ্রধান নিজ নিজ দলের সবার ধারণা ও অভিমত একটা কাগজে লিখবে। তাকিয়ে দেখো, সামনে টেবিলের উপর ডাকবাক্সটি রাখা আছে। তুমি যদি দলপ্রধান হও তবে লেখাটি ভাঁজ করে ডাকবাক্সে post করো। ১০ মিনিট পর প্রত্যেক দলপ্রধান একটি করে কাগজ বক্স থেকে উঠিয়ে পাঠ করবে। এতে প্রত্যেকে অন্য দলের লেখা পাঠ করার ও শোনার সুযোগ পাবে। যদি তুমি দলপ্রধান হও তবে জোরে স্পষ্টভাবে পড়ো আর তা যদি না হও মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঢুকে রাখো। ধরো তুমি দলপ্রধান হিসেবে ডাকবাক্স থেকে একটা কাগজ উঠিয়েছ এবং দেখলে এটা তোমার নিজের দলের, সেক্ষেত্রে এটা অন্য দলপ্রধানকে দিয়ে দাও। তুমি আবার একটা কাগজ উঠাও এবং পাঠ করো।
তুমি নিশ্চয়ই ঈশ্বরের দশ আজ্ঞা মেনে চলো। এ আড্ডাগুলো খ্রীষ্টধর্মের বিধি-বিধানের মূল ভিত্তি। এই আড্ডাগুলোতে ঈশ্বর ও মানুষকে ভালোবাসতে বলা হয়েছে। যীশুখ্রীষ্ট এ পৃথিবীতে এসে আমাদের পরোপকারী, নিঃস্বার্থপর ও দয়াশীল হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন।
চলো দেখি, পবিত্র বাইবেলে পরোপকার ও দানশীলতার বিষয়ে যীশু আমাদের কী শিক্ষা দিয়েছেন।
যীশু আবার যখন পথে বের হলেন তখন একজন লোক দৌড়ে তাঁর কাছে আসল এবং তাঁর সামনে হাঁটু পেতে বলল, “হে গুরু, আপনি একজন ভাল লোক। আমাকে বলুন, অনন্ত জীবন লাভ করবার জন্য আমি কি করব?” যীশু তাকে বললেন, “আমাকে ভাল বলছ কেন? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই ভাল নয়। তুমি তো আদেশগুলো জান, খুন কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, চুরি কোরো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না, ঠকিয়ো না, মা-বাবাকে সম্মান করো।' লোকটি যীশুকে বলল, “গুরু ছোটবেলা থেকে আমি এই সব পালন করে আসছি। এতে যীশু তার দিকে তাকিয়ে চেয়ে দেখলেন এবং ভালবাসায় পূর্ণ হয়ে তাকে বললেন,” একটা জিনিস তোমার বাকী আছে। যাও, তোমার যা কিছু আছে তা বিক্রি করে গরীবদের দান কর। তাতে স্বর্গে ধন পাবে। তারপরে এসে আমার শিষা হও।” এই কথা শুনে লোকটির মুখ ম্লান হয়ে গেল। তার অনেক ধনসম্পত্তি ছিল বলে সে দুঃখিত হয়ে চলে গেল।
তোমাকে একটু সহজ করে বলি
আদর্শ খ্রীষ্টিয় জীবন লাভের জন্য দশ আজ্ঞা হলো মৌলিক বিধিমালা। এই ধনী লোকটি বিশ্বস্ততার সাথে এই দশ আজ্ঞা পালন করছে। কিন্তু যীশু চান যে আমরা যেন এসব পালনের সাথে সাথে
মানুষকে ভালোবাসি, ধনসম্পদের প্রতি লোভ সংবরণ করে মানুষের কল্যাণ চিন্তা করি। ধনী লোকটি তার সম্পদ বিক্রি করে গরিবদের দিতে রাজি হয়নি কারণ ধনসম্পদের প্রতি মোহ ত্যাগ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এই ধনী যুবকের জীবন আধ্যাত্মিকতায় পূর্ণ, তাই যীশু তাকে ভালোবেসে আহ্বান করেছিলেন তার ঐশীরাজ্য স্থাপনে। অন্তরে ঈশ্বর ও মানুষের জন্য ভালোবাসা না থাকলে যীশুর ডাকে আমরা সাড়া দিতে পারি না। অনন্ত জীবন বলতে বুঝায় মৃত্যুর পর আমাদের আত্মা বেঁচে থাকবে এবং স্বর্গে ঈশ্বরের সাথে মিলিত হবে। অনন্ত জীবন পেতে হলে মানুষকে ভালোবাসতে হবে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করে। পরোপকার ও দানশীলতার মাধ্যমে আমরা পরস্পরকে ভালোবাসি।
এইজন্য যখন তুমি গরীবদের কিছু দাও তখন ভন্ডদের মত কোরো না। তারা তো লোকদের প্রশংসা পাবার জন্য সমাজ-ঘরে এবং পথে পথে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ভিক্ষা দেয়। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে।
তুমি যখন গরীবদের কিছু দাও তখন তোমার ডান হাত কি করছে তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিয়ো না।
প্রিয় শিক্ষার্থী, যীশু তাঁর কর্মজীবনে গারিব, অসহায় ও নির্যাতিতদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। আর আমাদেরও উপদেশ দিয়েছেন যেন আমরা গরিব প্রতিবেশীদের প্রতি দয়ালু ও সেবাপরায়ণ হই। চলো দেখি বাইবেলে যীশু কী বলেছেন।
যিনি তাঁকে দাওয়াত করেছিলেন পরে যীশু তাঁকে বললেন, “যখন আপনি খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করাবেন বা ভোজ দেবেন তখন আপনার বন্ধুদের বা ভাইদের কিংবা আত্ম-স্বজনদের বা ধর্মী প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করবেন না। তা করলে হয়ত তারাও এর বদলে আপনাকে নিমন্ত্রণ করবেন আর এই ভাবে আপনার নিমন্ত্রণ শোষ হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি যখন ভোজ দেবেন তখন গরীব, নুলা, খোঁড়া এবং অন্ধদের ডাকবেন। তাতে আপনি ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাবেন, কারণ তারা সেই নিমন্ত্রণের শোধ দিতে পারবেন না। যখন মৃত্যু থেকে নির্দোষ লোকদের জীবিত করা হবে তখন আপনি এর শোধ পাবেন।
তোমাকে একটু সহজ করে বলি
যীশু চান আমরা যে উপকার ও দানের কাজ করি তার বিনিময়ে যেন কিছু আশা না করি। আমাদের সমাজে যারা গরিব, শারীরিক ও মানসিকভাবে অসহায় তাদের আমরা সাহায্য করব। আমাদের এ কাজের জন্য শেষ বিচারের দিন ঈশ্বর আমাদের পুরস্কৃত করবেন।
যীশু অন্ধকে দৃষ্টি দিয়েছেন, খোঁড়াকে হাঁটার শক্তি দিয়েছেন। আমরা যীশুর মতো অলৌকিক কাজ করতে পারি না। কিন্তু আমরা গরিব প্রতিবেশীকে সাহায্য করতে পারি, অন্ধকে হাত ধরে রাস্তা পার করে দিতে পারি অথবা টাকার অভাবে যে চিকিৎসা পাচ্ছে না সামর্থ্য থাকলে তাকে আর্থিক সাহায্য নিতে পারি অথবা পাশে বসে সেবা করতে পারি। আমরা অপরকে অসংখ্য উপায়ে সেবা করতে পারি। পরের পৃষ্ঠায় দেওয়া ছবিগুলোতে কয়েকটি বাস্তব উদাহরণ দেখতে পারো।
প্রিয় শিক্ষার্থী, তুমি কি জানো যীশু প্রচার কাজ শুরু করার পূর্বে ৪০ দিন ৪০ রাত উপবাস ও প্রার্থনা করেছেন? আর শয়তান তখন তাঁকে প্রলোভনে ফেলার চেষ্টা করেছিল। যীশু শয়তানের প্রলোভন জয় করতে পেরেছিলেন। আজ শিক্ষক এই গল্পটি তোমাদের বলবেন।
এরপর পবিত্র আত্মা যীশুকে মরু এলাকায় নিয়ে গেলেন যেন শয়তান যীশুকে লোভ দেখিয়ে পাপে ফেলবার চেষ্টা করতে পারে। সেখানে চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত উপবাস করার পর যীশুর খিদে পেলো। তখন শয়তান এসে তাঁকে বললো, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে এই পাথরগুলোকে রুটি হয়ে যেতে বলো।”
যীশু উত্তরে বললেন, “পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না, কিন্তু ঈশ্বরের প্রত্যেকটি কথাতেই বাঁচে।"
তখন শয়তান যীশুকে পবিত্র শহর যিরুশালেমে নিয়ে গেলো এবং উপাসনা ঘরের চূড়ার উপর তাঁকে দাঁড় করিয়ে বললো, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে লাফ দিয়ে নিচে পড়ো, কারণ পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, ঈশ্বর তাঁর দূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন; তাঁরা তোমাকে হাত দিয়ে ধরে ফেলবেন যাতে তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে।
যীশু শয়তানকে বললেন, “আবার এই কথাও লেখা আছে, তোমার প্রভু ঈশ্বরকে তুমি পরীক্ষা করতে যেয়ো না।”
তখন শয়তান আবার তাঁকে খুব উঁচু একটা পাহাড়ে নিয়ে গেল এবং জগতের সমস্ত রাজ্য ও তাদের জাঁকজমক দেখিয়ে বললো, “তুমি যদি মাটিতে পড়ে আমাকে প্রণাম করে তোমার প্রভু বলে স্বীকার করো তবে এই সবই আমি তোমাকে দেবো।”
তখন যীশু তাকে বললেন, “দূর হও, শয়তান। পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকেই ভক্তি করবে, কেবল তাঁরই সেবা করবে।" তখন শয়তান তাঁকে ছেড়ে চলে গেলো, আর স্বর্গদূতেরা এসে তাঁর সেবা-যত্ন করতে লাগলেন।
তোমাকে একটু সহজ করে বলি
যীশু তাঁর প্রচার জীবন শুরু করার পূর্বে ৪০ দিন উপবাস ও প্রার্থনা করেছেন যেন পবিত্র আত্মার কাছ থেকে জ্ঞান ও শক্তি লাভ করতে পারেন, মন থেকে লোভ ও পাপ দূর করে পবিত্র হতে পারেন। শয়তানের প্রলোভন। আমাদের ভালো কাজ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। যীশু যেমন শয়তানের প্রলোভন জয় করে তাঁর উদ্দেশ্যে স্থির থেকেছেন তেমনি আমরাও জাগতিক বিষয়ের লোভ ত্যাগ করে ঈশ্বরের পথে চলব। উপবাস ও প্রার্থনা আমাদের পাপ ও প্রলোভন জয় করার শক্তি দেয়।
এবার শিক্ষক মথি ৪:১-১১ পদের আলোকে তোমাদের একটা ভূমিকাভিনয়ে অংশগ্রহণ করতে বলবেন। একজনকে যীশু ও অন্যজনকে শয়তানের ভূমিকায় অভিনয় করতে বলবেন। একজন নেপথ্যে গল্পের ধারা। বর্ণনা করবে। তুমি আগ্রহী হলে অভিনয়ে অংশ নিতে পারো। শিক্ষক তোমাকে চিত্রনাট্যের বিষয়ে সাহায্য করবেন আর নিচেও চিত্রনাট্যটি দেওয়া আছে।
শয়তান বা মন্দতার চরিত্রটি নিয়ে তোমার একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শয়তানের চরিত্রটিকে পর্দার আড়াল থেকে অভিনয় করতে হবে, তাকে সবাই দেখতে পাবে না-শুধু কণ্ঠ শুনতে পারবে (যীশুও শুধু কণ্ঠ শুনতে পারছিলেন)। তুমি বা তোমার যে সহপাঠী এ চরিত্রে অভিনয় করবে তাকে জোর গলায় পর্দার আড়াল থেকে (বা আসবাবপত্রের আড়াল থেকেও হতে পারে) তার সংলাপগুলো বলতে হবে। তোমরা শুধু মদতার কণ্ঠ শুনতে পারবে তাকে দেখতে পাবে না।
আর তুমি বা তোমার যে সহপাঠী এ চরিত্রে অভিনয় করছ, এক প্রকার দ্বিধা অতিক্রম করে এই অভিনয়টা করতে এসেছ বলে তাকে একটু ভালোবাসা জানিয়ে রাখি। এটা একটা অভিনয় শুধু যা যীশু'র পবিত্র জীবনকে সবার সামনে তুলে ধরবে। তবে আমাদের জীবন জুড়ে কিন্তু মন্দতার সাথে লড়াই করে ভালো মানুষ হতে হয়। যীশু রোমীয় ১২:২১-এ বলছেন, “মন্দের কাছে হেরে যেয়ো না, বরং ভালো দিয়ে মন্দকে জয় করো।"
ভূমিকাভিনয় শুরু হলে মনোযোগ দিয়ে তোমার অংশটি করো, নতুবা সুশৃঙ্খলভাবে উপভোগ করো।
চিত্রনাট্য
সুত্রধার মরুপ্রান্তরে ৪০ দিন উপবাস করার পর যীশুর দিনে পেল। তখন শয়তান তাকে লোভে ফেলার চেষ্টা করলো।
শয়তানঃ তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে এ পাথরগুলোকে রুটি হয়ে যেতে বলো।
যীশুঃ পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না কিন্তু ঈশ্বরের মুখের প্রত্যেকটি কথাতেই বাঁচে।
সূত্রধারঃ তখন শয়তান যীশুকে পবিত্র শহর যিরুশালেমে নিয়ে গেল। সে যীশুকে মন্দিরের চূড়ায় নিয়ে গেল।
শয়তানঃ তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে লাফ দিয়ে নিচে পড়ো, কারণ পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে" ঈশ্বর তাঁর দূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দিবেন তাঁরা তোমাকে হাত দিয়ে ধরে ফেলবেন যাতে তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে।”
যীশুঃ আবার একথাও লেখা আছে, “তোমার প্রভু ঈশ্বরকে পরীক্ষা করতে যেয়ো না।”
সূত্রধারঃ তখন শয়তান আবার তাঁকে খুব উঁচু একটা পাহাড়ে নিয়ে গেল এবং জগতের সমস্ত রাজ্য ও জাঁকজমক দেখিয়ে বললো
শয়তানঃ তুমি যদি মাটিতে পড়ে আমাকে প্রণাম করে তোমার প্রভু বলে স্বীকার করো তবে এই সবই আমি তোমাকে দেবো।
যীশুঃ দূর হও শয়তান, পবিত্র শাস্ত্ৰে লেখা আছে “তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকেই ভক্তি করবে, কেবল তাঁরই সেবা করবে।"
সুত্রধারঃ তখন শয়তান তাঁকে ছেড়ে চলে গেলো আর স্বর্ণদূতেরা এসে তাঁর সেবাযত্ন করতে লাগলো।
আশ্বাসবাণী নব;
শত ভুল করে চাহিনাকো আর
বাড়াতে বৃথাই বোঝা আপনার
অকৃতি অধমে লও গো এবার
তোমার কাজের মাঝে।
প্রার্থনা ও উপবাস বিষয়ে যীশুর শিক্ষা কী, চলো জানি।
তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন ভণ্ডদের মত করো না, কারণ তারা লোকদের কাছে নিজেদের দেখাবার জন্য সমাজঘরে ও রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে ভালবাসে। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর তখন ভিতরে গিয়ে দরজা বন্ধ কোরো এবং তোমার পিতা, যাকে দেখা না গেলেও উপস্থিত আছেন, তাঁর কাছে প্রার্থনা কোরো। তোমার পিতা, যিনি গোপন সবকিছু দেখেন, তিনিই তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
যখন তোমরা প্রার্থনা করো তখন অফিহনীদের মত অর্থহীন কথা বার বার বোলো না। অধিহনীরা মনে করে বেশী কথা বললেই ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন। তাদের মতো কোরো না, কারণ তোমাদের পিতার কাছে চাইবার আগেই তিনি জানেন তোমাদের কি দরকার। এইজন্য তোমরা এইভাবে প্রার্থনা করো : হে আমানের স্বর্গস্থ পিতা, তোমার নাম পবিত্র বলে মানা হোক। মোর রাজ্য আসুক। তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক। যে খাবার আজ আমাদের দরকার তা আমাদের দাও। যারা আমাদের উপর অন্যায় করে, আমরা যেমন তাদের ক্ষমা করেছি তেমনি তুমিও আমাদের সমস্ত অন্যায় ক্ষমা করো। তুমি আমাদের পরীক্ষায় পড়তে দিয়ো না, বরং শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করো।
তোমরা যদি অন্যদের দোষ ক্ষমা কর তবে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতাও তোমাদেরও ক্ষমা করবেন। কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের ক্ষমা না করো তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও ক্ষমা করবেন না।
তোমরা যখন উপবাস করো তখন ভণ্ডদের মত মুখ কালো করে রেখো না। তারা যে উপবাস করছে তা লোকদের দেখাবার জন্য তারা মাথায় ও মুখে ছাই মেখে বেড়ায়। আমি তোমাদের সত্যিই
বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে। কিন্তু তুমি যখন উপবাস করো তখন মাথায় তেল দিয়ো ও মুখ ধুয়ো, যেন অন্যেরা জানতে না পারে যে, তুমি উপবাস করছো। তাহলে তোমার পিতা, যিনি দেখা না গেলেও উপস্থিত আছেন; কেবল তিনিই তা দেখতে পাবেন। তোমার পিতা, যিনি গোপন সব কিছু দেখেন, তিনিই তোমাকে পুরস্কার দেবেন।
তোমাকে একটু সহজ করে বলি
যীশু আমাদের বলতে চান যে আমরা যেন লোকদেখানো প্রার্থনা না করি বরং অন্তর থেকে ভক্তি সহকারে প্রার্থনা করি। প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আমরা ঈশ্বরের সাথে কথা বলি। তাই প্রার্থনা করব গোপনে ও নির্জনে। অর্থহীন কথা না বলে আমাদের যা দরকার তা ঈশ্বরকে বলব। ঈশ্বর তো আমাদের মনের কথা জানেন। যীশু যে প্রার্থনা শিখিয়েছেন তাতে প্রথমে ঈশ্বরের প্রশংসা করা হয়েছে। তারপর মানুষের প্রয়োজনের কথা বলা হয়েছে। আমরা ঈশ্বরের কাছে অঙ্গীকার করি আমরা অন্যকে ক্ষমা করলে ঈশ্বরও আমাদের ক্ষমা করবেন। যীশু আরো বলেন যে আমরা যেন লোকদেখানো উপবাস না করি। আমাদের খাওয়াদাওয়ার মধ্যে যেন সংযম, সৌন্দর্য ও পবিত্রতা থাকে। উপবাসের মধ্য দিয়ে আমরা সংযমী, পবিত্র ও আত্মত্যাগী হতে পারি। সংযমী ও আত্মত্যাগী হলে আমরা পরোপকারী ও দানশীল হতে পারবো।
এই সেশনে তুমি গির্জায় চার্চে প্রার্থনানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে। এজন্য তুমি তোমার বিদ্যালয়ের কাছে কোনো গির্জা/চার্চে যাবে। তুমি হয়তো সবসময় তোমার বাবা-মা/অভিভাবকের সাথে গির্জায় চার্চে যাও। আর এবার শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে যাবে, এটা ভেবে নিশ্চয়ই তোমার আনন্দ হচ্ছে।
ধার্থনানুষ্ঠানে যাওয়ার পূর্বে
বাবা-মা ও শিক্ষকের কাছ থেকে তুমি জেনেছ যে গির্জা/চার্চ একটি পবিত্র স্থান এবং এ পবিত্র পরিবেশে গির্জা/চার্চের স্থাপনা, ব্যক্তি এবং সবকিছুর প্রতি শিক্ষার্থীর শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। এজন্য শিক্ষক নিচের নির্দেশনাগুলো দিবেন যা তুমি পালন করার চেষ্টা করবে।
তুমি হয়তো জানো, তারপরও বলছি, নিচের নির্দেশনাগুলো ভালোভাবে মেনে চলবে।
গির্জা/চার্চে সুশৃঙ্খলভাবে প্রার্থনানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে। গির্জা/চার্চের প্রার্থনানুষ্ঠানের বিভিন্ন অংশের প্রার্থনা ও নিয়ম মেনে চলবে। যেমন, প্রার্থনা অনুষ্ঠান শুরু হয় একটি ভক্তিমূলক গান দিয়ে। অতঃপর ধর্মযাজক পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ করেন এবং তার আলোকে উপদেশমূলক কথা বলেন। প্রার্থনার এরকম সকল অংশে তোমরা যীশুর প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা নিয়ে অংশ নিবে।
প্রার্থনা অনুষ্ঠান শেষে সুশৃঙ্খলভাবে গির্জা চার্চ থেকে বিদ্যালয়ে ফিরে আসবে। শিক্ষককে ধন্যবাদ জানাও। তোমার বাবা-মা/অভিভাবক নিতে এলে তাদের সাথে ঘরে ফিরে যাবে অথবা একা যদি যাও ঠিকমতো। সুন্দরভাবে বাসায় ফিরবে।
এ সেশনে তুমি একটা মজার খেলা খেলবে। শিক্ষক তোমাদের প্রত্যেককে একটা চিরকুট দিবেন যা এখানেও নেওয়া হলো
তোমার নাম: | ||
প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
তুমি কি দানশীল? | ||
তুমি কি পরোপকারী? | ||
তুমি কি প্রার্থনাশীল? | ||
তুমি কি কখনো যারা খেতে পায় না তাদের কষ্ট অনুধাবন করেছ? | ||
তুমি কি কখনো বাইবেল-এর শিক্ষা থেকে অন্যকে পরামর্শ দিয়েছ? | ||
তুমি কি কখনো অন্যের কল্যাণ চেয়ে প্রার্থনা করেছ? |
চিরকুটের প্রশ্নগুলো পড়ে গভীরভাবে চিন্তা করো এবং কোনো প্রশ্নের উত্তর "হ্যাঁ" হলে "হ্যাঁ" -এর কলামে টিক চিহ্ন (√) দিবে এবং "না" হলে "না"-এর কলামে টিক চিহ্ন দিবে।
তুমি ছয় মিনিট সময় পাবে (প্রতি প্রশ্নের জন্য এক মিনিট করে)। এবার শিক্ষক তোমার পুরনকৃত উত্তরগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি তোমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন কেন তুমি কোনো প্রশ্নের উত্তরে “হ্যাঁ” বা “না” লিখেছ। তুমি নিশ্চয়ই সঠিক উত্তর দিতে পারবে।
তোমার যেকোনো একটি “না”-কে পরবর্তী সেশনের আগেই "হ্যাঁ" করতে হবে, শিক্ষক তোমাকে এমন একটি নির্দেশনা দিবেন। তুমি কোনো দানের/পরোপকারের/প্রার্থনার কাজ না করে থাকলে একটি দানের কাজ বা কোনো একটি পরোপকারের কাজ বা কোনো একটি প্রার্থনা করা, ইত্যাদি করতে পারো।
তোমার সকল প্রশ্নের উত্তর "হ্যাঁ" হলে আরও জোরালোভাবে কোন কাজটি করতে চাও তা নির্ধারণ করো। একইভাবে বিশেষ ক্ষেত্রে তুমি সব প্রশ্নের উত্তর “না” দিলে একটি প্রশ্ন চিহ্নিত করো যার সাপেক্ষে তুমি পরবর্তী সেশনের আগে এমন কোনো একটি কাজ করবে যাতে পরবর্তী সময়ে তার উত্তরটি "হ্যাঁ" হয়।
বিশেষভাবে লক্ষ করো, এই খেলা শেষে তুমি দান, পরোপকার, উপবাস, প্রার্থনা, ইত্যাদি বিষয়ের যেকোনো একটি বাড়ির কাজ পাবে যা পরবর্তী সেশনের আগে তোমাকে সম্পন্ন করতে হবে।
বাড়ির কাজের ছবি
যে বাড়ির কাজটি তুমি করেছো তার উপর ভিত্তি করে নিচের বক্সে একটি ছবি এঁকে ফেলো।
|
সবাইকে শুভেচ্ছা আপন করো এবং সমবেত কণ্ঠে নিচের গানটি গাও।
যীশুর প্রেমে, যীশুর প্রেমে শান্তি সুখ পাই।
পাশে থাকেন, দৃষ্টি রাখেন জানি সর্বদাই।
ধুয়া ভালোবাসেন যীশু নাথ আমায়
মনে মনে প্রতিক্ষণে প্রাণ জুড়ায়।
যীশুর বলে, যীশুর বলে হৃদয় রক্ষা পায়।
তাঁরে যখন ডাকি, তখন দুঃখ দূরে যায়।
যীশুর ইচ্ছা, যীশুর ইচ্ছা পালন করা চাই।
প্রিয় ত্রাতা জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, ভালোবাসি তাই।
যীশুর দয়া, যীশুর দয়ার তো সীমা নাই।
পড়ে গেলে ধরেন তুলে, পাপের ক্ষমা পাই।
যীশুর সেবা, যীশুর সেবা ভালো লাগে ভাই।
সুযোগ পেয়ে সুখী হয়ে, কার্যে কাল কাটাই।
যীশুর হৃদয়, যীশুর হৃদয় ধারণ করা চাই।
প্রার্থনাতে শাস্ত্রপাঠে রত থাকি তাই
এবার তুমি যে দানের/উপকারের/প্রার্থনার কাজ করেছ তা শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করো। তোমার সহপাঠীর উপস্থাপনা মনোযোগ দিয়ে শোনো।
শিক্ষক নিচের গানটির গাওয়ার মধ্য দিয়ে সেশন শুরু করতে পারেন। গানটি তোমার জানা না থাকলে YouTube থেকে দেখে নিতে পারো। বা তোমার বাবা-মা/অভিভাবক বা ভাই-বোন বা আত্মীয়কে জিজ্ঞেস করতে পারো, হতে পারে তাঁরা কেউ গানটি জানেন এবং তোমাকে গেয়ে শোনালেন।
আমি তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।
তোমার সেবার মহান দুঃখ সহিবারে দাও ভকতি।।
তাই চাই ভরিয়া পরান দুঃখের সাথে দুঃখের ঘ্রাণ,
তোমার হাতের বেদনার দান এড়ায়ে চাহি না মুকতি।
মুখ হবে মম মাথার ভূষণ সাথে যদি দাও ভকতি।।
যত দিতে চাও কাজ দিয়ো যদি তোমারে না দাও ভুলিতে,
অন্তর যদি জড়াতে না দাও জানজঞ্জালগুলিতে।
ধুলায় রাখিয়ো পবিত্র ক'রে তোমার চরণধূলিতে
তুলায়ে রাখিয়ো সংসারতলে, তোমারে দিয়ো না ভুলিতে।।
যে পথে ঘুরিতে দিয়েছ ঘুরিবা যাই যেন তব চরণে,
সব শ্রম যেন বহি লয় মোরে সকলশ্রান্তিহরণে।
দুর্গম পথ এ ভৰগ্ৰহন, কত ত্যাগ শোক বিরহদহন
জীবনে মৃত্যু করিয়া বহন প্রাণ পাই যেন মরণে
সন্ধ্যাবেলায় লভি গো কুলায় নিচ্ছিলশরণ চরণে।।
এখন মনোযোগ সহকারে video টি দেখে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর ভাবো।
বাড়ির কাজ
বাড়িতে গিয়ে তোমার বাবা-মা/অভিভাবকের সাথে “প্রতিবেশী কে? তা নিয়ে আলোচনা করবে। পরবর্তী সেশনে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। তোমার বাবা-মা/অভিভাবক তোমার প্রশ্নটি বুঝতে না পারলে নিচের ঘরের লেখাটি দেখাও।
প্রিয় বাবা-মা/অভিভাবক,
আপনার সন্তান বা পোষ্য “প্রতিবেশী কে” এ সম্পর্কে যদি জানতে চায়
তাহলে আপনার ধারণা তাকে জানান।
এই সেশনে শিক্ষক তোমাদের মজার একটি খেলা খেলতে বলতে পারেন। ফেলাটা কার্ড দিয়ে খেলা হতে পারে। শিক্ষকের দিকনির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে শোনো। এরপর আনন্দ সহকারে সহপাঠী-বন্ধুদের সাথে খেলাটায় অংশগ্রহণ করো।
এখানে তোমাদের একটি পোস্টারও তৈরি করতে হতে পারে। শিক্ষকের নির্দেশনা শুনে নিচে পোস্টারের একটি খসড়া করে ফেলো।
|
প্রিয় শিক্ষার্থী, সকলকে শুভেচ্ছা আপন করে একটি মৌখিক প্রার্থনা ভক্তি সহকারে করো। একটি নমুনা প্রার্থনা নিচে দেওয়া হলো। শিক্ষক চাইলে তোমাকে নিয়ে অন্য প্রার্থনাও করতে পারেন।
হে পিতা পরমেশ্বর, আমরা তোমার প্রশংসা করি, তোমার গৌরব করি এবং ধন্যবাদ করি; তুমি আমাদের সকলকে সুস্থ রেখেছো, নিরাপদে রেখেছো এবং আমরা শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হতে পেরেছি। আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করি। সকলকে নিরাপদ ও সুস্থ রাখো। যারা খাদ্য পায় না তাদের খাদ্য দাও, যারা অসুস্থ আছে তাদের সুস্থ করো যেনো আমরা আবার সকলে মিলে তোমার ধন্যবাদ করতে পারি। আমেন।।
শিক্ষক তোমাদের একটি গল্প শোনাবেন। এটা কিন্তু রূপকথার গল্প নয়, সত্যি সত্যি ঘটে এমন একটি গল্প। তোমরা হয়তো এমন ঘটনা দেখেছ বা তোমাদের কারো কারো জীবনে ঘটেছে। এ ঘটনাতে মন খারাপ হতে পারে, কিন্তু গল্পটি মনোযোগ সহকারে শোনো এবং দেখো শেষ পর্যন্ত কী হয় ।
এ গল্পটি তোমাদের মতো বয়সেরই নমি নামের একজনের গল্প।
নমি এবং তার ঠাকুরদাদা রিকশায় করে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করে একটি মোটর সাইকেলের সাথে তাদের রিকশাটির ধাক্কা লাগে। আর তারা দুজন এবং রিকশাওয়ালা এই ধাক্কায় পড়ে গিয়ে ব্যথা পায়। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা নমিদেরকে কয়েকজন লোক দেখেও সাহায্য না করে চলে যায়। এরপর আরও একদল লোক ওদেরকে দেখতে পায় কিন্তু তারাও সাহায্য না করে চলে যায়। নমির মনে হচ্ছিলো ঐ দলে কেউ কেউ ছিলো যারা ওদের বাসার পাশেই থাকে। এভাবে আরও কিছু সময় পার হয়। আরও পরে একজন পথিক আসেন এবং নমিদেরকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। নমির সারা শরীরে ব্যথা করছিলো, ওর ঐ সুহৃদ পথিকের চেহারাটি মনে নেই। কিন্তু এটা মনে আছে যে লোকটির হাত বেশ উষ্ণ ছিলো।
এই গল্পে নমির প্রতিবেশী কে ছিল? তুমি যাকে প্রতিবেশী হিসেবে চিহ্নিত করেছ সে কেনো প্রতিবেশী হলো। এ গল্পের চরিত্রগুলো হলো: মোটর সাইকেল আরোহী, রিকশাওয়ালা, প্রথমবারের লোকেরা, দ্বিতীয় লোকের দল যেখানে নমিদের পাশের বাসার কিছু লোকও ছিল, তৃতীয়বারের একজন পথিক। এ চরিত্রগুলোর মধ্যে ভেবে দেখো তো কাকে তোমার প্রতিবেশী মনে হয় এবং কেনো মনে হয়। শিক্ষক তোমাকে হয়তো এ কাজটি বাড়ির কাজ হিসেবে দিতে পারেন। তোমার ভাবনা গুছিয়ে সুন্দরভাবে লিখে ফেলো নিচের নির্ধারিত ঘরে। পরবর্তী সেশনে এই লেখাটি শিক্ষককে দেখাতে পারো।
|
না থাকে অন্ধকার, না থাকে মোহপাপ
, না থাকে শোকপরিতাপ।
হৃদয় বিমল হোক, প্রাণ সবল হোক,
বিঘ্ন দাও অপসারি।।
কেন এ হিংসাদ্বেষ, কেন এ ছদ্মবেশ,
কেন এ মান-অভিমান।
বিতর' বিতরণ প্রেম পাষাণহৃদয়ে,
জয় জয় হোক তোমারি।।
প্রভু যেমন আমাদের ভালবেসেছেন
এসো আমরা তেমনই পরস্পরকে ভালবাসি।।
তোমার প্রতিবেশী বিষয়ে ভাবনাগুলো তুমি খাতায় লিখেছিলে। এখন তোমাকে প্রতিবেশী নিয়ে যীশু কী ভাবেন সেটা জানাই।
যদিও প্রতিবেশী বলতে আমরা সাধারণত আমাদের বাসার আশেপাশের সবাইকে বুঝি কিন্তু যীশু বলেন যে যারা আমাদের সাহায্য করেন তারাই আমাদের প্রতিবেশী। তারা দূরে থাকুক কি কাছে থাকুক। তাই নমি'র গল্পের প্রতিবেশী হলো ঐ তৃতীয়বারের পথিক। চলো পড়ে দেখি, প্রতিবেশী এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা সম্মন্ধে যীশু আমাদের কী শিক্ষা দিয়েছেন।
তিনি আমাদের প্রথমে ভালবেসেছিলেন বলেই আমরা ভালবাসি। যে বলে সে ঈশ্বরকে ভালবাসে অথচ তার ভাইকে ঘৃণা করে সে মিথ্যাবাদী; কারণ চোখে দেখা ভাইকে যে ভালবাসে না সে অদেখা ঈশ্বরকে কেমন করে ভালবাসতে পারে? আমরা তাঁর কাছ থেকে এই আদেশ পেয়েছি যে, ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে তারা যেন ভাইকেও ভালবাসে।
একটা নতুন আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি, তোমরা একে অন্যকে ভালোবেসো। আমি যেমন তোমাদের ভালোবেসেছি তেমনি তোমরাও একে অন্যকে ভালোবেসো। যদি তোমরা একে অন্যকে ভালবাসো তবে সবাই বুঝতে পারবে তোমরা আমার শিষ্য।
তোমাকে একটু সহজ করে বলি
এই দুইটি অংশে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে। তোমার চারপাশে যারা বসবাস করে তাদের সাথে সুন্দর ভালোবাসার সম্পর্ক বজায় রেখে শান্তিতে বসবাসের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নিজের আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীর সাথে মিলেমিশে না থাকলে প্রকৃতভাবে ঈশ্বরকে ভালোবাসা যায় না। মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই ঈশ্বরকে ভালোবাসা যায়।
এই মানুষকে ভালোবাসার দুইটি বাস্তব উদাহরণ পাশের পৃষ্ঠায় দেখবে। তোমার শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলে তিনি পুরো দেশজুড়ে এবং পুরো বিশ্বজুড়ে ঘটা এরকম আরও অনেক উদাহরণের কথা তোমায় জানাতে পারেন। সংবাদপত্রে এবং সংবাদেও এরকম উপকারের কথা পড়বে, শুনবে বা দেখবে। যারা মানুষের উপকার করে, মানুষকে ভালোবাসে, ঈশ্বর তাদের অনেক ভালোবাসেন।
তোমাকে আরও একটা মজার গল্প শোনাই। এটি হলো দয়ালু শমরীয়ের গল্প। তুমি আগেও এটি শুনে বা পছে থাকতে পারো। এসো পবিত্র বাইবেলে এ সম্পর্কে কী আছে তা দেখি।
লুক ১০:২৫-৩৭ বাইবেলের অংশটি শিক্ষক নাটিকার মতো করে পাঠ করার জন্য তোমাদের বলতে পারেন। একজন হবে ধর্মশিক্ষক এবং অন্যজন যীশু। তুমি আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারো। কারণ শিক্ষক তোমার বন্ধুর সাথে তোমাকেও পাঠ করার সুযোগ দিতে পারেন।
ধর্মশিক্ষক: গুরু, কি করলে আমি অনন্ত জীবন লাভ করতে পারব?
যীশু: মেশির আইনকানুনে কি লেখা আছে? সেখানে কি পড়েছেন?
ধর্মশিক্ষক: তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত অন্তর, সমস্ত প্রাণ, সমস্ত শক্তি ও সমস্ত মন দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভালোবাসবে। আর তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালোবাসবে।
যীশু: আপনি ঠিক উত্তর দিয়েছেন। যদি আপনি তা করতে থাকেন তবে জীবন পাবেন।
ধর্মশিক্ষক: আমার প্রতিবেশী কে?
যীশু: একজন লোক যিরুশালেম থেকে যিরীহো শহরে যাবার সময় ডাকাতদের হাতে পড়ল। তারা লোকটির কাপড় খুলে ফেলল এবং তাকে মেরে আধমরা করে রেখে গেল। পরে একজন পুরোহিত সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি সেই লোকটিকে দেখে পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন। ঠিক সেইভাবে একজন লেবীয় সেই জায়গায় আসল এবং তাকে দেখতে পেয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। তারপর শমরিয়া প্রদেশের একজন লোকও সেই পথ দিয়ে যেতে যেতে ঐ লোকটির কাছাকাছি আসল। তাকে দেখে তার মমতা হল। লোকটির কাছে গিয়ে সে তার আঘাতের উপর তেল আর আংগুর রস ঢেলে দিয়ে বেঁধে দিল। তারপর তার নিজের গাধার উপর তাকে বসিয়ে একটা হোটেলে নিয়ে গিয়ে তার সেবা যত্ন করল। পরের দিন সেই শমরীয় দুটা দীনার বের করে হোটেলের মালিককে দিয়ে বলল, এই লোকটিকে যত্ন করবেন। যদি এর চেয়ে বেশী খরচ হয় তবে আমি ফিরে এসে তা শোধ করব।
এখন আপনার কি মনে হয়? এই তিনজনের মধ্যে কে সেই।
ডাকাতদের হাতে পড়া লোকটির প্রতিবেশী?
ধর্মশিক্ষক যে তাকে মমতা করল সেই লোক।
যীশু: তা হলে আপনিও গিয়ে সেই রকম করুন।
তোমাকে একটু সহজ করে বলি
দয়ালু শমরীয়ের ঘটনা অচেনা বা অপরিচিত মানুষকে সেবা করার একটি উদাহরণ। এখানে ভালোবাসার দুটি দিক প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথমত ঈশ্বরের ভালোবাসা। দয়ালু শমরীয় ঈশ্বরের চরিত্রকে প্রকাশ করে। দয়ালু শমরীয় যেমন আঘাতপ্রাপ্ত লোকটিকে যত্ন করেছিলেন ও ভালোবেসেছিলেন, ঈশ্বরও তেমনি সকল মানুষকে যা করেন ও ভালোবাসেন।
দ্বিতীয়ত প্রতিবেশীকে ভালোবাসা। ব্যাপক অর্থে সকল মানুষই আমাদের প্রতিবেশী। আমরা যখন যেথায় যাই সেখানের মানুষ আমাদের প্রতিবেশী হয়ে উঠে। তাই সকল মানুষের যত্ন নেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সর্বোপরি বলা যায় যীশু কোনো নির্দিষ্ট জাতি, সম্প্রদায়, গোষ্ঠী, বর্ণের মানুষের কথা বলেননি। তিনি সকল মানুষের কথা বলেছেন। সকল মানুষকে ভালোবাসতে বলেছেন। তাই এলো আমরা সকলে পরস্পরকে ভালোবাসি।
প্রিয় শিক্ষার্থী, এখানে তোমরা অভিনয়ে অংশগ্রহণ করবে। কাজটি কীভাবে করবে তা শিক্ষক তোমাদের বুঝিয়ে বলবেন। তুমি যাতে আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে থাকতে পারো সেজন্য চুপি চুপি তোমাকে বলে রাখছি। অভিনয়ের চরিত্রগুলো লটারির মাধ্যমে শিক্ষক তোমাদের মধ্যে বন্টন করে দিবেন। কাজটি তোমাদের জোড়ায় জোড়ায় করতে হবে। প্রতিটি কাগজে দুটি করে চরিত্র লেখা থাকবে। শিক্ষক তোমাদের জোড়ায় ভাগ করে দিবেন। এক জোড়া শিক্ষার্থী কোনো একটি চিরকুট তুলবে। চিরকুটে দুইটি চরিত্রের উল্লেখ থাকবে। তোমার জোড়ার চিরকুট থেকে জানতে পারবে তোমাদের কোন দুইটি চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। তোমরা নিজেদের মধ্যে ঠিক করে নিবে কে কোন চরিত্রে অভিনয় করবে।
অভিনয়ের জন্য জোড়া চরিত্রের কিছু নমুনা নিচে দেওয়া হলো:
ভূমিকাভিনয়
অপরকে সাহায্য করার বিষয়ে যীশু কত গুরুত্ব দিয়েছেন তা তো তোমরা জেনেছ। এই জানার ভিত্তিতে আজকে একটা মজার কাজ করবে। তোমাদের কিছু চরিত্র অভিনয় করে দেখাতে হবে। এই চরিত্রগুলো বাস্তব জীবনে আমরা সব সময় দেখি। কিন্তু তোমাদের কাজ হবে যীশুর শিক্ষার আলোকে এই চরিত্রগুলোকে এমনভাবে রূপায়িত করা যাতে তোমাদের মাঝে যীশুর প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে।
তোমাকে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা নিয়ে বিপদগ্রস্ত বা পিছিয়ে থাকা ব্যক্তির চরিত্রের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। এটাও মনে রাখতে হবে যে, তোমাকে যদি বিপদগ্রস্ত বা পিছিয়ে থাকা ব্যক্তির অভিনয় করতে হয়। তোমাকে আত্মমর্যাদা নিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
অভিনয় শেষে তোমাদের অভিনীত বিভিন্ন ভূমিকা নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হতে পারে। তোমাদের লক্ষ রাখতে হবে, তোমরা যে যেই ভূমিকায় অভিনয় করো না কেন তাতে যেন যীশুর শিক্ষার প্রতিফলন ঘটে।
বাড়ির কাজ
তোমরা বিপদগ্রস্ত কারো প্রতি দয়ার বিভিন্ন অভিনয় করেছ বা বাস্তবজীবনে দেখেছ। এবার সত্যি সত্যি তোমাকে তোমার বাসার আশেপাশে, এলাকায়, অর্থাৎ তোমার পরিমণ্ডলে ভালো কাজ করতে হবে। এজন্য তোমাকে তোমার পক্ষে করা সম্ভব এমন দুটি কাজের কথা লিখে নিয়ে আসতে হবে। যেমন হতে পারে, শীতার্তকে শীতবস্ত্র দেওয়া, অথবা সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে খেলনা দেওয়া ইত্যাদি। শিক্ষক ইচ্ছে করলে দলে ভাগ করেও এই বাড়ির কাজটি তোমাদের করতে দিতে পারেন।
শিক্ষক তোমাদের সমবেত কণ্ঠে অপরকে সাহায্যের বা পরোপকারের একটি গান গাইতে বলবেন। তোমার বন্ধুদের সাথে তুমিও অংশগ্রহণ করো।
বাড়ির কাজ
এবার তোমার লিখে আনা কাজগুলো শিক্ষক পড়ে দেখবেন এবং কী কারণে তোমরা এ কাজগুলো বাছাই করেছ তা তিনি জানতে চাইতে পারেন। তোমাদের এ দুটি কাজের মধ্য থেকে একটি কাজ বেছে নিতে হবে যা পরবর্তী সেশনের আগে তোমাদের পক্ষে করা সম্ভব হবে। যদি তোমার লিখে আনা কাজের মধ্যে কোনোটাই সহজসাধ্য না হয় তবে চিন্তা করো না, শিক্ষক তোমার সুবিধামতো কোনো কাজ বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবেন।
তোমাকে লক্ষ রাখতে হবে, কাজগুলো এমন হবে না যে শুধু টাকা দিয়ে করে ফেলা যাবে। আরও লক্ষ রাখতে হবে, যাতে কাজগুলোর মূল ভূমিকায় থাকে সহানুভূতি এবং ভালোবাসা। একটা উদাহরণ দিই, কোনো প্রতিষ্ঠানে শুধু অর্থ দানের বদলে তুমি নিজের হাতে শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বন্টন করেছ এমন একটি কাজকে বেছে নিতে পারো।
এবার কাজটি তুমি কীভাবে করবে তা তোমাকে পরিকল্পনা করতে হবে। সেক্ষেত্রে তোমার পরিকল্পনা শিক্ষক শুনবেন এবং কোনো পরামর্শ থাকলে তিনি তোমাকে সহায়তা করবেন। তবে কাজটি তোমার বাবা-মা/অভিভাবকের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সেশনের আগেই সম্পন্ন করতে হবে।
পরবর্তী সেশনে তোমাদের করা কাজগুলো নিয়ে শ্রেণিকক্ষে কোনো কার্যক্রম করা হলে তা করার জন্য প্রস্তুত থেকো কিন্তু। হতে পারে তোমাদের সেশনে কোনো একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন লিখতে বলা হলো বা উপস্থাপন করতে বলা হলো।
Read more